श्रीरामकृष्ण वचनामृत
( 5 अप्रैल, 1884)
“ ब्राह्मसमाजी निराकार-निराकार कहा करते हैं । ख़ैर, कहें । उन्हें अन्दर से पुकारने ही से हुआ । अगर अन्तर की बात हो तो वे तो अन्तर्यामी हैं, वे अवश्य समझा देंगे, उनका स्वरूप क्या है ।
“परन्तु यह कहना अच्छा नहीं – कि हम लोगों ने जो कुछ समझा है, वही ठीक है, और दूसरे जो कुछ करते हैं, सब गलत । हम लोग निराकार कह रहे हैं, अतएव वे साकार नहीं, निराकार हैं; हम लोग साकार कह रहे हैं, अतएव वे साकार हैं, निराकार नहीं ! मनुष्य क्या कभी उनकी इति कर सकता है ?
“इसी तरह वैष्णवों और शाक्तों में भी विरोध है । वैष्णव कहता है ‘हमारे केशव ही एकमात्र उद्धारकर्ता हैं’ और शाक्त कहता है, ‘बस हमारी भगवती एकमात्र उद्धार करनेवाली है ।’
“मैं वैष्णवचरण को सेजो बाबू* के पास ले गया था । वैष्णवचरण वैरागी है, बड़ा पण्डित है, परन्तु कट्टर वैष्णव है । इधर सेजो बाबू भगवती के भक्त हैं । अच्छी बातें हो रही थीं, इसी समय वैष्णवचरण ने कह डाला, ‘मुक्ति देनेवाले तो एक केशव ही हैं ।’
केशव का नाम लेते ही सेजो बाबू का मुँह लाल हो गया और वे बोले, ‘तू साला ।’ (सब हँस पड़े।) मथुर बाबू शाक्त जो थे ! उनके लिए यह कहना स्वाभाविक ही था । मैंने इधर वैष्णवचरण को खींच लिया ।
“जितने आदमियों को देखता हूँ, धर्म-धर्म करके एक दूसरे से झगड़ा किया करते हैं । हिन्दू, मुसलमान, ब्राह्मसमाजी, शाक्त, वैष्णव, शैव, सब एक दूसरे से लड़ाई-झगड़ा करते हैं यह बुद्धिमानी नहीं है । जिन्हें कृष्ण कहते हो, वे ही शिव, वे ही आद्याशक्ति हैं, वे ही ईसा हैं और वे ही अल्लाह हैं । एक राम उनके हजार नाम ।
“वस्तु एक ही है, केवल उसके नाम अलग अलग हैं । सब लोग एक ही वस्तु की चाह कर रहे हैं । अन्तर इतना ही है की देश अलग है, पात्र अलग और नाम अलग । एक तालाब में बहुत से घाट हैं । हिन्दू एक घाट से पानी ले रहे हैं, घड़े में भरकर कहते हैं, ‘जल’ । मुसलमान एक दूसरे घाट से पानी भर रहे हैं, चमड़े के बैग में – कहते हैं, ‘पानी’ । क्रिस्तान तीसरे घाट से पानी ले रहे हैं – वे कहते हैं ‘वाटर’ (Water) । (सब हँसते हैं।)
“अगर कोई कहें, नहीं यह चीज जल नहीं है, यह पानी है या वाटर नहीं जल है, तो यह हँसी की ही बात होगी । इसीलिए दल, मतान्तर और झगड़े होते हैं । धर्म के नाम पर लट्ठम-लट्ठा , मार-काट ? यह सब अच्छी नहीं है । सब उन्हीं के पथ पर जा रहे हैं । आन्तरिकता होने पर, व्याकुलता आने पर – उन्हें मनुष्य प्राप्त करेगा ही।
(मणि से) तुम यह सुनते जाओ – वेद, पुराण, तन्त्र-शास्त्र उन्हींको चाहते हैं; वे किसी दूसरे को नहीं चाहते । सच्चिदानन्द बस एक ही हैं । जिन्हें वेदों में ‘सच्चिदानन्द ब्रह्म’ कहा है, तन्त्र में उन्हींको ‘सच्चिदानन्द शिव’ कहा है, उन्हींको उधर पुराणों में ‘सच्चिदानन्द कृष्ण’ कहा है ।”
{ (To M.) "This is for you. All scriptures — the Vedas, the Puranas, the Tantras — seek Him alone and no one else, only that one Satchidananda. That which is called Satchidananda Brahman in the Vedas is called Satchidananda Siva in the Tantra. Again it is He alone who is called Satchidananda Krishna in the Puranas."
(মণির প্রতি) — “তুমি এইটে শুনে যাও —“বেদ, পুরাণ, তন্ত্র — সব শাস্ত্রে তাঁকেই চায়, আর কারুকে চায় না — সেই এক সচ্চিদানন্দ। যাকে বেদে ‘সচ্চিদানন্দ ব্রহ্ম’ বলেছে, তন্ত্রে তাঁকেই ‘সচ্চিদানন্দ শিবঃ’ বলেছে, তাঁকেই আবার পুরাণে ‘সচ্চিদানন্দ কৃষ্ণঃ’ বলেছে।”
“ব্রহ্মজ্ঞানীরা নিরাকার নিরাকার বলছে, তা হলেই বা; আন্তরিক তাঁকে ডাকলেই হল। যদি আন্তরিক হয়, তিনি তো অন্তর্যামী, তিনি অবশ্য জানিয়ে দেবেন, তাঁর স্বরূপ কি।
“তবে এটা ভাল না — এই বলা যে আমরা যা বুঝেছি তাই ঠিক, আর যে যা বলছে সব ভুল। আমরা নিরাকার বলছি, অতএব তিনি নিরাকার, তিনি সাকার নন। আমরা সাকার বলছি, অতএব তিনি সাকার, তিনি নিরাকার নন। মানুষ কি তাঁর ইতি করতে পারে?
“এইরকম বৈষ্ণব শাক্তদের ভিতর রেষারেষি। বৈষ্ণব বলে, আমার কেশব, — শাক্ত বলে, আমার ভগবতী, একমাত্র উদ্ধারকর্তা।
“আমি বৈষ্ণবচরণকে সেজোবাবুর কাছে নিয়ে গিছলাম। বৈষ্ণবচরণ বৈরাগী খুব পণ্ডিত কিন্তু গোঁড়া বৈষ্ণব। এদিকে সেজোবাবু ভগবতীর ভক্ত। বেশ কথা হচ্ছিল, বৈষ্ণবচরণ বলে ফেললে, মুক্তি দেবার একমাত্র কর্তা কেশব। বলতেই সেজোবাবুর মুখ লাল হয়ে গেল। বলেছিল, ‘শালা আমার!’ (সকলের হাস্য) শাক্ত কিনা। বলবে না? আমি আবার বৈষ্ণবচরণের গা টিপি।
“যত লোক দেখি, ধর্ম ধর্ম করে — এ ওর সঙ্গে ঝগড়া করছে, ও ওর সঙ্গে ঝগড়া করছে। হিন্দু, মুসলমান, ব্রহ্মজ্ঞানী, শাক্ত, বৈষ্ণব, শৈব — সব পরস্পর ঝগড়া। এ বুদ্ধি নাই যে, যাঁকে কৃষ্ণ বলছো, তাঁকেই শিব, তাঁকেই আদ্যাশক্তি বলা হয়; তাঁকেই যীশু, তাঁহাকেই আল্লা বলা হয়। এক রাম তাঁর হাজার নাম।
“বস্তু এক, নাম আলাদা। সকলেই এক জিনিসকে চাচ্ছে। তবে আলাদা জায়গা, আলাদা পাত্র, আলাদা নাম। একটা পুকুরে অনেকগুলি ঘাট আছে; হিন্দুরা একঘাট থেকে জল নিচ্ছে, কলসী করে — বলছে ‘জল’। মুসলমানরা আর একঘাটে জল নিচ্ছে, চামড়ার ডোলে করে — তারা বলছে ‘পানী।’ খ্রীষ্টানরা আর-একঘাটে জল নিচ্ছে — তারা বলছে ‘ওয়াটার।’ (সকলের হাস্য)
“যদি কেউ বলে, না এ জিনিসটা জল নয়, পানী; কি পানী নয়, ওয়াটার; কি ওয়াটার নয়, জল; তাহলে হাসির কথা হয়। তাই দলাদলি, মনান্তর, ঝগড়া, ধর্ম নিয়ে লাটালাটি, মারামারি, কাটাকাটি — এ-সব ভাল নয়। সকলেই তাঁর পথে যাচ্ছে, আন্তরিক হলেই ব্যাকুল হলেই তাঁকে লাভ করবে।
"The Brahmos insist that God is formless. Suppose they do. It is enough to call on Him with sincerity of heart. If the devotee is sincere, then God, who is the Inner Guide of all, will certainly reveal to the devotee His true nature."But it is not good to say that what we ourselves think of God is the only truth and what others think is false, that because we think of God as formless, therefore He is formless and cannot have any form; that because we think of God as having form, therefore He has form and cannot be formless. Can a man really fathom God's nature?"This kind of friction exists between the Vaishnavas and the Saktas; The Vaishnava says, 'My Kesava is the only Saviour', whereas the Sakta insists, 'My Bhagavati is the only Saviour.'"Once I took Vaishnavcharan to Mathur Babu. Now, Vaishnavcharan was a very learned Vaishnava and an orthodox devotee of his sect. Mathur, on the other hand, was a devotee of the Divine Mother. They were engaged in a friendly discussion when suddenly Vaishnavcharan said, 'Kesava is the only Saviour.' No sooner did Mathur hear this than his ,face became red with anger and he blurted out, 'You rascal!' (All laugh.) He was a Sakta. Wasn't it natural for him to say that? I gave Vaishnavcharan a nudge."I see people who talk about religion constantly quarrelling with one another. Hindus, Mussalmans, Brahmos, Saktas, Vaishnavas, Saivas, all quarrel with one another. They haven't the intelligence to understand that He who is called Krishna is also Siva and the Primal Sakti, and that it is He, again, who is called Jesus and Allah. There is only one Rama and He has a thousand names.'"Truth is one; only It is called by different names. All people are seeking the same Truth; the variance is due to climate, temperament, and name. A lake has many ghats. From one ghat the Hindus take water in jars and call it 'jal'. From another ghat the Mussalmans take water in leather bags and call it 'pani'. From a third the Christians take the same thing and call it 'water'. (All laugh.) Suppose someone says that the thing is not 'jal' but 'pani', or that it is not 'pani' but 'water', or that it is not 'water' but 'jal', It would indeed be ridiculous. But this very thing is at the root of the friction among sects, their misunderstandings and quarrels. This is why people injure and kill one another, and shed blood, in the name of religion. But this is not good. Everyone is going toward God. They will all realize Him if they have sincerity and longing of heart.
{ [5 अप्रैल 1884, श्रीरामकृष्ण वचनामृत (सम्पूर्ण, द्वितीय मुद्रण -4 . 11 . 2014/ परिच्छेद~ 79 पृष्ठ -485) ब्रह्मसमाजी , वैष्णव और शाक्त साम्प्रदायिकता के सम्बन्ध में उपदेश "]
कोई टिप्पणी नहीं:
एक टिप्पणी भेजें